মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) সংবাদদাতা: নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউশী ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামে বুধবার সকালে অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচির (ইজিপিপি) শ্রমিকদের সড়কের মাটি কাটার কাজ বাদ দিয়ে নিজ বাড়ির কাজ করান শ্রমিক সর্দার আবু বক্কর লেভেল। প্রতিবাদ করায় আনোয়ারা বেগম নামে এক নারীকে বেধম মারধর করে আহত করেন তিনি। পরে আনোয়ারাকে উদ্ধার করে বারহাট্টা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ।
ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম বাউসী ইউনিয়নের ভেটুয়াকান্দা গ্রামের মুত. আলাল উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচির একজন নারী শ্রমিক।
আর অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার আবু বক্কর লেভেল একই ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামের মৃত. শুক্কুর আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় উপজেলার বাউসি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হারুলিয়া গ্রামের একটি সড়ক মাটি কেটে মেরামত করছেন ২০ জন শ্রমিক। এ দলের সর্দার চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ আবু বক্কর লেভেল। কিন্তু আবু বক্কর সড়কের মাটি কাটা বাদ দিয়ে ওই শ্রমিকদের দিয়ে তার নিজের বাড়ির নানা কাজ করাচ্ছেন বেশ কয়েকদিন ধরে। এরই প্রতিবাদ করায় বুধবার দুপুরে আনোয়ারাকে ব্যাপক মারধর করেন আবু বক্কর। পরে আনোয়ারাকে উদ্ধার করে বারহাট্টা হাসপাতালে পাঠান স্থানীয়রা। সাংবাদিকরা জেনে ফেললে কৌশলে আনোয়ারাকে পাঠিয়ে দেয়।
হারুলিয়া গ্রামের শেখ শহীদ জানান, সর্দার আবু বক্কর কর্মসূচির শ্রমিকদের দিয়ে তার নিজের বাগিতে কাজ করান। এটা অন্যায়, এতে জনগণের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেউ তার বাড়ির কাজ করতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর করা হয়। আনোয়ারা একজন অসহায় নারী।
ভুক্তভোগী আনোয়ারা জানান, কর্মসূচির মাটি কাটার কাজ না করে শ্রমিকদের দিয়ে আবু বক্কর তার নিজের বাড়ির কাজ করান। আমি এর প্রতিবাদ করলে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে আমাকে বেধম মারধর করে। পরে উপস্থিত লোকজন আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযুক্ত সর্দার আবু বক্কর লেভেলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। আজ দুপুরে হারুলিয়া বাজারে অনেকের সাথে কথা বললে তারা জানান, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আন্দোলন করা হবে।
বাউসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল হক বলেন, মারধরের ঘটনা সত্য। খবর শুনে হাসপাতালে ভর্তি আনোয়ারাকে দেখতে এসেছি। বিষয়টি দুঃখজনক। এ ঘটনায় সর্দার আবু বক্করের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বারহাট্টা থানার ওসি লুৎফুল হক বলেন, খবর শুনেছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেয়ে ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, কাজের শ্রমিকদের মারধর করা খুবই অন্যায়। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। সর্দার সে কাজটা করেছে সেটা অগ্রহণযোগ্য। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।