জামালগঞ্জে মানব বন্ধন  পাগনার হাওরে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবীতে 

মো. শাহীন আলম, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ও ভীমখালি এই দুটি ইউনিয়নের পাগনার হাওরের পূর্বপাড় ( মল্লিকপুর, ভান্ডা ও রাজাপুরসহ ১০ টি গ্রামের) হাজারো কৃষকের প্রায় ১৫০০ একর বোরো জমির  জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে এই ১০ গ্রামবাসীর আয়োজনে মল্লিকপুর পশ্চিমের কান্দায় হাওর পাড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১০ গ্রামের হাজারো কৃষক অংশগ্রহন করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন, সাবেক ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মালিক, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ, মো. আক্তার হোসেন, শিহাব উদ্দিন, আফজল হোসেন, শহিদুল ইসলাম,আরাফাত উল্ল্যাহ, মোস্তফা মেম্বার, আবুল কালাম, ইউপি মহিলা সদস্য ইনুফা আক্তার, মফিজুর রহমান,সাবেক ইউপি সদস্য হোসেন আহমদ মো. নুরুল আমনি, করম আলী ও মারফত মিয়া প্রমুখ। কৃষকরা বলেন, দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে এই হাওরের লম্ববিল থেকে বিনাজুড়া হয়ে লক্ষীপুর কানাই খালী নদী পর্যন্ত  তিন কিলোমিটার এলাকাজুরে নালাটি পলি পরে ভরাট হওয়ায় ১০টি গ্রামের ১৫০০ একর বোরো জমি অনাবাদি থাকে। এখানকার কৃষকরা মানবেতন জীবন যাপন করে আসলেও দেখার যেন কেহ নেই। নির্বাচন আসলে তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হন জনগনকে আশ্বাস দেন নির্বাচিত হলে এই তিন কিলোমিটার জলাবদ্ধতা নিরসনে খননের মাধ্যমে পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা করে এই অনাবাদি জুমিগুলো আবাদের আওতায় নিয়ে আসবেন। কিন্তু নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হয়েই এই হাজারো কৃষকের জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন পাগনার হাওরের পূর্বপাড় মল্লিকপুর,ভান্ডা ও রাজাপুরসহ ১০ টি গ্রামের ১৫০০ একর বোরো জমির  জলাবদ্ধতা নিরসনের কোন উদ্যোগে কেহ নেননি।
এই কথা গুলো বলেন মল্লিকপুর,  হারারকান্দি, ভান্ডা, রাজাবাজ, মাখরখলা ও ফেনারবাক ইউনিয়নের হিন্দু রাজাবাজ, খুজারগাঁও, উজানদৌলতপুর, ভাটি দৌলতপুর, বীনাজুরা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
জানাযায়, ১৯৯০ সাল থেকে এই হাওরের পানি নিষ্কাসনের জন্য লম্বাবিল ও বালুচরা বিলের নালা দিয়ে ( ভাটির খাড়া) কানাইখালী নদী দিয়ে বিনাজুড়া – কামারগাঁও – লক্ষীপুর ইনাতনগর হয়ে ফেনারবাকের মহিষাকুড়ির খাল হয়ে মূল পাগনার হাওরে পানি পতিত হইত। বিগত ৩০ বছর ধরে পলি পরে ভাটির খাড়া বা লম্বাবিলের মূখ হইতে প্রবাহিত খাল বা নালাটিসহ বীনাজুরা গ্রামের ব্রিজের পূর্বে কানাইখালীর অংশ প্রায় ৩ কিলোমিটার পানি নিষ্কাসনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে এই হাওরের বোরো ফসল আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। বিভিন্ন নামে প্রকল্প তৈরি করে নামকাওয়াস্তে কিছু কাজ হলেও স্থায়ী সমস্যার আজো কোন সমাধান হয়নি বলে তারা দাবী করেন। প্রায় ৩০ বছর যাবত পৌষ মাসের শেষ দিকে পানি নিষ্কাসনের জন্য প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে টাকা তুলে সেলু মেশিন দিয়ে সেচ করে চারা রোপণ করতে হয় এবং হাওরের উপরিভাগে কিছু অংশে মাঘ মাসে কিছুটা বোরো ধান আবাদ করা গেলেও অধিকাংশ জমিন অনাবাদি থেকেই যায়।  অবিলম্বে এই হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ইজ্ঞিনিয়ার মেয়াজ্জেম হোসেন রতন ও  শামীমা আক্তার খানম এমপির নিকট জোর দাবী জানান।