মোনায়েম খান নেত্রকোণা : জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার ইছাপুর গ্রামে মাসের পর মাস তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামের শত শত মানুষ বিশুদ্ধ পানির জন্য গ্রামের হরি মন্দিরে ছুটে যাচ্ছেন। তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে পানির উৎসগুলো (পুকুর-খাল) শুকিয়ে যাওয়ায় শুধু খাবার পানিই নয়, রান্নার পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে।সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ইছাপুর গ্রামে ১৮০০,শত মানুষের বসবাস। জনস্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া ১৫ থেকে ২০টি অগভীর টিউবওয়েল রয়েছে। টিউবওয়েল গুলো পুরাতন ও অগভীর হওয়াতে ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে গ্রামের মানুষের মধ্যে পানি সংকট দেখা দেয়। এই নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান মেম্বার তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। ইছাপুর গ্রামের বিধান কৃষ্ণ সরকার বলেন ফাল্গুন মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত এই তিন মাস গ্রামে পানির সংকট দেখা দেয় তখন গ্রামের মন্দির ও আমার বাড়ি থেকে লোকজন খাওয়ার পানি সংগ্রহ করে। গ্রামের গৃহবধূ মিনা রানী বলেন, ‘আমাদের টিউবওয়েলে পানি উঠেনা তাই প্রতিদিন মন্দির থেকে পানি নিতে আসি। গ্রামের নিরাঞ্জন দেবনাথ বলেন যারা ক্ষমতাবাণ ও চেয়ারম্যান মেম্বার রয়েছেন তাদের বাড়িতে গভীর নলক’প রয়েছে। আমরা গরীব কাঙ্গাল হওয়াতে সরকারি গভীর নলকূপ পাওয়ার কোনো আশা নেই। এই পানিতে গোসল রান্না ও খাওয়ার কাজে ব্যবহার করতে হয়। ’অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে গেছে বেশিরভাগ পুকুর পানিরঘাট। এলাকার শিখা রানী বলেন, কলস নিয়ে অন্য গ্রামে যেতে হয়না। এখানেই পানি সংগ্রহ করে নিতে হয়। গ্রামের আব্দুর ছালাম বলেন রোজার দিনে আমরা কষ্ট করে এখান থেকে পানি সংগ্রহ করি। কোনো বৃষ্টি নেই, পুকুরে পানি নেই। বিশুদ্ধ পানির জন্য গ্রামের অনেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকে। অনেকেই রয়েছেন তিন বেলায় একবার করে পানি নিতে আসে। এইভাবে দুর থেকে পানি নিয়ে তো আর বেঁচে থাকা যায় না। দুই ঘণ্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থেকে পানি নিলাম। গরমের মধ্যে এইভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ একটু খাবার পানির জন্য অপেক্ষা করছে। এই নিয়ে মেন্দিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হাকিমের সাথে কথা বললে জানা যায়, তার এই বিষয়ে কিছু জানা নেই। এই নিয়ে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুয়েল সাংমা বলেন পানির সংকট আছে কিনা জানি না। তবে টিউবওয়েলের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপির সাথে তারা যোগাযোগ করবে বরাদ্ধ আছে কিনা।