মোঃ জাফর উল্লাহ, কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) সংবাদদাতাঃ নাম তাঁর লালু। তবে এটা কোন মানুষের নাম না। এটি একটি শিয়ালের নাম। আজিজুল হক ও সুমা আক্তার দম্পত্তি ছোট বেলা থেকে লালন-পালন করার সময় ওই নাম রেখেছে শিয়ালটির। এর পর থেকেই “শিয়ালের বাড়ি” নামে পরিচিত হয়ে ওঠে ওই বাড়িটি। যেখানে সাধারণত শিয়ালের কামড় থেকে বাঁচতে ভয়ে থাকে হাঁস, মুরগি ও ছাগল। সেখানে একসাথেই তাঁরা সবাই বসবাস করছে। রবিবার সকালে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের নয়নকান্দি গ্রামে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা গেছে। আজিজুল হকের বাড়ির আঙ্গিনায় ছাগলগুলোর সাথে খেলা করছে শিয়ালটি। এমনকি বাড়ির উঠোনে হাঁস-মুরগীর সাথেও ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। গৃহবধু সুমা আক্তার একটি পাত্রে খাবার দিলে হাঁস-মুরগি ও শিয়াল একই সাথে পাত্রে খাবার খাচ্ছে। এ সময় শিয়াল পালন নিয়ে কথা হলে সুমা আক্তার বলেন, তাঁর স্বামী আজিজুল হক প্রায় দেড় বছর আগে উপজেলার পার্শবর্তী নাজিরপুর ইউনিয়নের লোহারগাঁও গ্রামে কাজ করতে যান। সেখানে একটি জঙ্গলে আওয়াজ শুনে এগিয়ে গিয়ে তিনটি শিয়ালের বাচ্চা দেখতে পান। পরে শিয়ালগুলোকে উদ্ধার করে একটি বাচ্চা নিজের সাথে করে নিয়ে আসেন। তখন তার আনুমানিক বয়স ছিল তিন মাস। বাড়িতে নিয়ে শিয়াল সাবকের নাম রাখা হয় লালু। তিনি আরও জানান, বাড়িতে আনার পর বোতলে দুধ ভরে খাওয়ানো হয়। একমাত্র পর থেকে মাছ মাংস অন্যান্য খাবার খাওয়ানো হয়। এছাড়াও আমার বাড়িতে ১২টি ছাগল ও বেশ কয়েকটি হাঁস-মুরগী রয়েছে। শিয়ালটি তাদের কোন ক্ষতি করে না। একসাথে হাঁস-মুরগী-ছাগলের বসবাস করছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকেই ওই বাড়িতে উৎসুক জনতা আসা-যাওয়া লেগেই আছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমরা জানি শেয়াল হচ্ছে মাংসাশী প্রাণী। যেসব প্রাণীর জলাতঙ্ক বা র্যাবিস হয় বা জীবাণু বহন করে, তাদের মধ্যে শেয়াল অন্যতম। সে ক্ষেত্রে জলাতঙ্ক টিকা শিয়াল ও তার পালনকারী দুজনেরই নেওয়া উচিত।’