ব্রেকিং নিউজঃ

রৌমারীতে শ্রাবণের টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত নিমজ্জিত রোপা আমন

 

মোস্তাফিজুর রহমান তারা রৌমারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা : শ্রাবনের শেষে টানা বর্ষণে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার প্রায় ৬ টি ইউনিয়ন বন্দবেড়, দাঁতভাঙ্গা, চরশৌলমারী, শৌলমারী, যাদুরচর ও রৌমারী ইউনিয়নের শতশত একর জমি রোপা আমন নিমজ্জিত হয়েছে। চরবাঘমারা, নামা বারবান্দা, খেওয়ারচর, বড়াইবাড়ি, ঠনঠনি পাড়া, চাক্তাবাড়ি, কান্দাপাড়া, বারবান্দা, পাখিউড়া, ফুলকারচর, খড়ানিরচর, চরকাজাইকাটা, খেতারচর, কাউয়ারচর, ইটালুকান্দা, সায়দাবাদ, ধনারচর, আলগারচর, কুটিরচর, গুটলিগ্রাম, খেদাইমারীসহ এলাকার নিম্নাঞ্চলের রোপা আমন নিমজ্জিত হয়েছে এবং সবজি চাষিদের জমি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অপরদিকে প্রবল বর্ষণে বিভিন্ন রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
রৌমারী উপজেলা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ জানান, এবার উপজেলায় রোপা আমনের লক্ষমাত্রা ৯ হাজার ৭২৫ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি। এতে নিমজ্জিত হয়েছে প্রায় ৬০ হেক্টর ও শাক সবজি আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে ৮ হেক্টর। সকল ইউনিয়নেই নিম্নাঞ্চল গুলি রোপা আমনসহ সাক সবজির বেশ ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি গতি আরো কয়েকদিন থাকলে বড়ধরনের ক্ষতি হবে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শীত মৌসুম সামনে রেখে বিভিন্ন রকমের সবজির চাষ করা হয়েছে। কয়েকদিনের টানা প্রবল বৃষ্টির কারনে বেশির ভার জমি তলিয়ে গেছে ও বৃষ্টির আঘাতে নষ্ট হয়ে গেছে শাক সবজি। পানি জমে থাকলে পুরো ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। চরবাঘমারা গ্রামের চাষি জুলফিকার, আলী আকবরসহ কয়েকজন জানান, বিভিন্ন ভাবে ধারদেনা, ঋণপাতি ও নিজেদের ধান চাল বিক্রি করে রোপা আমন ও শীত কালিন কিছু সবজি চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

অপরদিকে টানা প্রবল বৃষ্টিতে পাখিউড়া ব্রীজের পূর্বে এ্যাপ্রোচসহ রাস্তা, বন্দবেড় চরবাঘমারা গ্রামের বেড়িবাঁধ, পাখিউড়া ব্রীজের পশ্চিম পাশ থেকে পাখিউড়া শেখের মোড় পর্যন্ত, রৌমারী থানা মোড় হতে খন্জনমারা সুইজ গেট, নটানপাড়াসহ বিভিন্ন রাস্তা গুলি ভেঙ্গে গেছে। এতে গাড়িসহ মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এবিষয়ে বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার জানান, টানা কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের রোপা আমন, শাক সবজিসহ পাখিউড়া ব্রীজের পূর্বে এ্যাপ্রোচ ও রাস্তা, বন্দবেড় গ্রামের বেড়ি বাঁধসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে। গাড়ি ও মানুষের চলাচলের সমস্যা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, এবার উপজেলায় রোপা আমন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে, ৯ হাজার ৭২৫ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি। নিমজ্জিত হয়েছে ৫৩ হেক্টর। শাক সবজি নিমজ্জিত হয়েছে ৭ হেক্টর। তবে আর কোন বৃষ্টি না হলে নিমজ্জিত হওয়া রোপা আমনের ক্ষতি হবে না। শাক সবজির ক্ষতি হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, কয়েকদিনের টানা প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে। সরাসরি মাঠে গিয়ে দেখা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেল ৪ টায় জরুরী সভা ডাকা হয়েছে। রাস্তাঘাট গুলি মেরামত করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলী বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কিছু অঞ্চলের রোপা আমনসহ শাক সবজির নিমজ্জিত হয়েছে। অন্যদিকে অনেক রাস্তাঘাটও ভেঙ্গে গেছে। চেষ্টা করছি রাস্তাঘাট গুলি মেরামত করার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*